নবজাতক শিশুকে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে গেলেন দরিদ্র বাবা!!

নবজাতককে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে গেলেন দরিদ্র বাবা
কুমিল্লায় অর্থের অভাবে নবজাতককে হাসপাতাল ভর্তি করে পালিয়ে গেলেন হতদরিদ্র বাবা। আর অন্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মায়ের কোনো খোঁজ না পেয়ে মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে গত ৭ দিন ধরে ওই শিশুর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করে আসছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নজরে এলে চিকিৎসার সব দায়িত্ব নিলেন পুলিশ সুপার।
৫ জুলাই দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জমজ সন্তানের জন্ম দেন সদর উপজেলার আড়াইওরা গ্রামের হতদরিদ্র মিজান দম্পতি। জন্মের পরপরই ছেলে শিশু মারা যায় আর জীবন সংকটে মেয়ে শিশুর। এমন পরিস্থিতিতে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে তাকে ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় ওইদিনই শিশুকে ভর্তি করা হয় নগরীর ঝাউতলা এলাকার কুমিল্লা মা ও শিশু স্পেশালাইজড হাসপাতালে। এরপর থেকেই শিশুটির বাবা মিজান উধাও। আর শিশুর মা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। হাসপাতালে ভর্তির সময় যে ফোন নম্বর দেয়া হয়েছিল, সে নম্বর কখনও বন্ধ থাকে আবার কখনও খোলা থাকলেও কেউ ফোন রিসিভ করেন না। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাবাকে খুঁজে না পেলেও মায়ের সন্ধান পান এবং শিশুর শারীরিক অবস্থার বিষয়ে তাকে জানান। ৮ জুলাই মা হাসপাতালে এলেও আর্থিক জোগান না থাকায় বিভিন্ন স্থানে পরিবারের সদস্যরা সহযোগিতা চাইতে থাকেন।
বিষয়টি কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামের নজরে আসার পর তিনি চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহনের দায়িত্ব নেন। এই খবর জানার পর শিশুর বাবা ও স্বজনরা রোববার (১২ জুলাই) দুপুরে হাসপাতালে ছুটে আসেন। তারা জানান টাকা না থাকায় লজ্জায় শিশুটিকে নিতে হাসপাতালে আসেননি তারা। 
কুমিল্লা মা ও শিশু স্পেশালাইজড হাসপাতাল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. এমরান জানান, শিশুটি অপরিপক্ক হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছে। তার ওজন সাড়ে ৭শ গ্রাম। তবে আগের চেয়ে সুস্থ রয়েছে।
 
ওই হাসপাতালের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক বদিউল আলম চৌধুরী জানান, মানবিক দিক বিবেচনা করেই আমরা অভিভাবকহীন এ শিশুর চিকিৎসা সেবা চালিয়েছি। শিশুটির জীবন রক্ষা করাই ছিল আমাদের লক্ষ্য।
এ প্রসঙ্গে কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। তাই শিশুটির চিকিৎসা ব্যয়ের দায়িত্ব নিয়েছি। তবে, এটা ভালো খবর যে শিশুটি তার বাবা-মাকে ফিরে পেয়েছে। 
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৭ দিনে চিকিৎসা বাবদ ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। শিশুটিকে পুরোপুরি সুস্থ করতে আরও অর্থের প্রয়োজন
দৈনিক বিডি নিউজ

মানুষের কাছে সকল তথ্য ও মুখোশের আড়ালে সব কিছু জানিয়ে দেওয়াই এক মাত্র স্বার্থ আমাদের।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post